চামড়া শিল্পে বিপর্যয় কেন? - ramimonan.blogspot.com

Breaking

ramimonan.blogspot.com

ramimonan.blogspot.com

Ads

Post Top Ad

Tuesday, August 27, 2019

চামড়া শিল্পে বিপর্যয় কেন?

চামড়া শিল্পে বিপর্যয় কেন?

কেন বাংলাদেশের চামড়া শিল্পের বিপর্যয় ?
অতঃপর চামড়া রপ্তানির সিদ্ধান্ত ??



কেন বাংলাদেশের চামড়া শিল্পের বিপর্যয় ?
অতঃপর চামড়া রপ্তানির সিদ্ধান্ত ??
২০১৭ সালে উত্তর প্রদেশে কসাইখানাগুলো বন্ধ করে দেয় মোদি সরকার। এতে কাচামালের অভাবে বন্ধ হয়ে যায় কানপুরের ৩০০ ট্যানারি। এ অবস্থায় চেন্নাই ও কানপুরের বড় বড় চামড়া ব্যবসায়ী মোদি সরকারের কাছে আবেদন করে ট্যানারিগুলো পশ্চিমবঙ্গে বাংলাদেশের সীমানা ঘেষে সরিয়ে নিতে। উল্লেখ্য বাংলাদেশের বেনাপোল থেকে মাত্র ১০০ কিলোর মধ্যে ছোট পরিসরে বানতলা চার্মনগরী ছিলো। কিন্তু সেটা বৃহৎপরিসরে আন্তর্জাতিকভাবে চামড়া প্রডাক্টের আধার হিসেবে তৈরীর উদ্যোগ নেয় ভারতের মোদি সরকার।
আশ্চর্যের বিষয় ভারত সরকার ২০১৭ সালে ঠিক যখন সমস্ত ট্যানারিগুলো একত্রিত করে বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকায় নিয়ে আসছে, ঠিক তখনই (২০১৭সালে) বাংলাদেশের হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা বেশ শক্তভাবে রায় দেয় বাংলাদেশের হাজারিবাগের ট্যানারিগুলোকে এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য, বিচ্ছিন্ন করা হয় গ্যাস-পানি-বিদ্যুৎ। শুধু তাই নয় প্রতিদিন না যাওয়ার জন্য ধার্য করা হয় ৫০ হাজার টাকা জরিমানা। এ সময় বাংলাদেশের মধ্যম ও ছোট ট্যানারিগুলো ক্ষতি পুষাতে না পেরে পুরোপুরি হারিয়ে যায়। বড় ট্যানারিগুলো কোন মত ধার-দেনা করে বেচে থাকে। সেই বকেয়ার প্রভাব এ বছর দেখা যায়- চামড়া না কিনে মাটিতে পুতে ফেলা।
তবে লক্ষণীয়- স্রোতের আঘাতে নদীর এক পাড় ভেঙ্গে যেমন অন্যপারে চর উঠে, ঠিক তেমনি ২০১৭ সালে বাংলাদেশের ট্যানারিগুলো যখন ধ্বংস করা হচ্ছিলো, ঠিক ঐ সময়ই সীমানার ওপারে বড় পর্যায়ে গড়ে উঠছিলো ‘বানতলা চর্মনগরী’।
২০১৮ তে পশ্চিমবঙ্গ বিশ্ব বাংলা বাণিজ্য সম্মেলনে ইতালির শিল্প প্রতিনিধি আসে। তাদের আশ্বাসেই কয়েকদিন পর মমতা ইতালিতে যায় চামড়া শিল্প নগরীর জন্য ইনভেস্ট আনতে।
অতঃপর আজ থেকে মাত্র ১ মাস আগে জুলায়ের মাঝামাঝি পশ্চিমবঙ্গের উব্দোধন হয় বড় পরিসরে বানতলা চামড়া শিল্প নগরীর। সেখানে থাকছে লেদার গুডস পার্ক, ফুটওয়্যার পার্ক, ৪টি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট বা সিইটিপি। থাকছে সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট। যেখানে ছাঁট চামড়া পরিশোধন করে সার ও অন্যান্য জিনিস তৈরী করা যাবে। এই শিল্পনগরীতে শুধু ৫০০ ট্যানারিই থাকছে না, সাথে থাকছে চামড়াজাত পণ্য (জুতা, ব্যগ) ইত্যাদি তৈরীর ১০০ কারখানা, যেখান থেকে তৈরী চামড়া পণ্য বিদেশে রফতানির করা হবে। ইতিমধ্যে সেখানে ৫ লক্ষ লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে, আরো কর্মসংস্থানের সুযোগ হচ্ছে। চামড়া নিয়ে উচ্চতর লেখা-পড়ার জন্য সেখানে আলাদা লেদার টেকনোলোজি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হবে। বানতলা চামড়া নগরী সম্পর্কে ভারতের শিল্পমন্ত্রী অমিত মিত্র বলে, “বানতলাকে বিশ্বের সব থেকে বড় লেদার হাব হিসেবে গড়ে তুলতে চাই আমরা। গত ৩ বছর ধরে এই বিষয় নিয়েই কাজ করছি। “
বানতলা চর্মনগরীকে বলা হচ্ছে মেগা লেদার ক্লাস্টার। একসঙ্গে প্রচুর লোকের কর্মসংস্থান হওয়ায় একে ডাকা হচ্ছে ‘কর্মদিগন্ত’ নামে।
উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গের জন্যসংখ্যা বাংলাদেশের অর্ধেক এবং সেখানে এমন কোন গরু জবাই হয় না যে কানপুর-চেন্নাই থেকে বড় বড় ট্যানারি মালিকদের পশ্চিমবঙ্গে চলে আসতে হবে। পাশাপাশি ভারতীয় গরুর চামড়া কোয়ালিটি মোটেও উন্নত নয়, তাই বাংলাদেশের সীমানা ঘেষে বানতলায় পৃথিবীর অণ্যতম বৃহৎ লেদার হাব নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে ভারত সরকার, সেটা অবশ্যই ভারতীয় নিম্নমানের কাচামাল দিয়ে নয়, বাংলাদেশের উন্নতমানের কাচামাল দিয়ে।
এটা স্পষ্ট- বাংলাদেশের পাট শিল্প ধ্বংস করে যেভাবে সেই শিল্প ভারত নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো, ঠিক একই কায়দায় চামড়া শিল্পও নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হয়ে গেছে। তবে এজন্য দুটি বিষয় দরকার ছিলো-
১) আর্থিক দৈন্যতায় বাংলাদেশের ট্যানারিগুলো যেন চামড়া কিনতে না পারে।
২) সরকারীভাবে যেন কাচা চামড়া রপ্তানির অনুমতি দিয়ে দেয়া হয়।
ইতিমধ্যে দুটিই শর্তকিন্তু পূরণ হয়ে গেছে। এক্ষেত্রে ষড়যন্ত্রের সাথে সরকার, হাইকোর্ট ও মিডিয়াগুলো একযোগে কাজ করছে। অথচ কাচা চামড়া রপ্তানি করলে দেশী ট্যানারি শিল্প ‍পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যাবে, বেকার হয়ে যাবে, এর সাথে সংশ্লিষ্ট প্রায় ৫০ লক্ষ লোক।
আপনারা বাংলাদেশের মিডিয়া খুলে দেখবেন, তারা বাংলাদেশের ট্যানারি মালিকদের দোষারোপ করে বার বলছে বাংলাদেশের চামড়াগুলো যেন রপ্তানি করা হয়। অথচ এটা স্পষ্ট- পুরো ষড়যন্ত্রটা করাই হয়েছে বাংলাদেশের কাচামাল দিয়ে ভারতের বানতলা চামড়া শিল্পনগরীর উত্থ্যানের জন্য। কিন্তু দুঃখের বিষয়, আমরা সাধারণ জনগণ বিষয়টি বুঝতে না পেরে ঐ মিডিয়ার কথাই উঠছি, বসছি ।








No comments:

Post a Comment